(ক) শরীয়তের নির্ভরযোগ্য কিতাবাদি অধ্যয়নে একথা প্রমাণিত হয় যে, বিবাহিত ব্যাভিচারের শরয়ী শাস্তি হল, পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা। আর যদি দু’জনই বিবাহিত হয়, তাহলে দুজনেরই শাস্তি হল, পাথর নিক্ষে
পে মৃত্যুদন্ড। যাতে সে তার কুকর্মের উপযুক্ত ফলাফল ভোগ করতে পারে।
মনে রাখতে হবে, এ শাস্তি কেবল ইসলামী রাষ্ট্রেই দেওয়া যাবে এবং সে দেশের শরীয়া সরকার ইসলামী আইন অনুসারে সেটা প্রয়োগ করবে। ব্যক্তি পর্যায়ের কেউ নয়। ব্যভিচারী বা ব্যভিচারিণীর ব্যপারে এই শাস্তিই ইসলাম সমর্থন করে এবং বলে থাকে। এছাড়া অন্য কোনো শাস্তি যেমন উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা বা সম্পর্কচ্ছেদ করা বা দেশান্তরিত করা ইত্যাদি কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এর দ্বারা তার কোনো সংশোধন তো হয়ই না, বরং তাকে আরো উগ্রতার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। আমাদের দেশে যেহেতু ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিচারকার্য পরিচালনা হয় না, তাই এখন ব্যাভিচারী পুরুষ ও নারীর উপর আবশ্যকীয় কর্তব্য হলো, তারা নিজের গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে আর এমন কর্মে না জড়ানোর দৃঢ় সংকল্প করে খাঁটি মনে মহান আল্লাহ তাআলার দরবাবে তাওবা করতে হবে। সাথে সাথে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, অবশ্যই আল্লাহ তাআলা মাফ করে দিবেন।
মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “অবশ্যই আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করেন, যারা ভুলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তাওবা করে। এরাই হল সেই সব লোক, যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞাত ও প্রজ্ঞাবান”। (সূরা নিসা- ১৭ আয়াত)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, “তবে যারা তাওবা করে ও বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দিবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু”। (সূরা ফুরক্বান- ৭০)।
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, “যে কেউ কোনো খারাপ কাজ করল অথবা নিজের উপর জুলুম করল, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইল, তো সে আল্লাহকে অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু পাবে”। (সূরা নিসা- ১১০ আয়াত)।
হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, গুনাহ থেকে তাওবাকারী ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যার কোনো গুনাহ নেই। (ইবনে মাজাহ)।
অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দয়া করে না, তার উপরও দয়া করা হয় না।
(সূরা নিসা- ১৭ ও ১১০, সূরা ফুরক্বান- ৭০, বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৭৭৯, আদ্দুররুল মুখতার- ১০/৫০৩)