মিথ্যা কথা ধরা (কেউ মিথ্যা বললে বুঝবেন যেভাবে) মানুষের কিছু কিছু ক্ষুদ্র মুভমেন্ট ও এক্সপ্রেশন এর মাধ্যমে মিথ্যা কথা ধরা সম্ভব,যাকে মাইক্রোএক্সপ্রেশন বলে।
মাইক্রোএক্সপ্রেশন হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন অভিব্যক্তি থেকে তার মনোভাব সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। ডিটেকটিভ বই যারা পড়েন, তারা এ ব্যাপারটির সাথে বেশ ভালভাবে পরিচিত।আমরা বিভিন্ন সময় মানুষের সঙ্গে কথা বলি। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমরা দেখি অনেকে মিথ্যা কথা বলে। কোন মিথ্যা আমরা আমাদের জ্ঞান বুদ্ধি থেকে বুঝতে পারি, আবার কোন মিথ্যা বুঝতে পারি না। সৌভাগ্যবশত আমরা অন্যের অঙ্গভঙ্গি দেখেই বুঝতে পারি যে সে মিথ্যা বলছে কিনা। এই তত্ত্ব গুলো ১০০% সঠিক নয় । তবে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে মিথ্যা বলার সময় এই আচরন বা মুভমেন্ট গুলো দেখা যায় তাই এইটাই প্রাথমিক যাচাই।
মাথা দ্রুত নাড়াচাড়া করা:
যখন আপনি দেখেন যে বক্তা আপনার সাথে কথা বলতে বলতে মাথা ঘনঘন এলোমেলো নাড়াচ্ছেন, তবে বুঝবেন তিনি মিথ্যা বলছেন। সরাসরি কোন প্রশ্নের জবাবে মিথ্যা বললে এমনটি ঘটে।শ্বাস প্রশ্বাসের পরিবর্তন:
যিনি মিথ্যা কথা বলেন তিনি ঘন ঘন শ্বাস নেন। শ্বাস প্রশ্বাসের পরিবর্তনে তাদের কাঁধ উপরে উঠে যায়। কন্ঠ হালকা হয়ে আসে। হৃৎস্পন্দনের ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। দুশ্চিন্তা কাজ করে।অস্বাভাবিকভাবে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্ঠা:
তারা উসখুশ করে আর একদম নড়াচড়া করতে চান না। যখন কেউ আপনার সঙ্গে বন্ধুসুলভ হয়ে সহজে মিশার চেষ্ঠা করে, সহজ আচরণ করে, তখন তার দেহের নড়াচড়া সহজ ও স্বাচ্ছন্দময় হবে। কিন্তু কথা বলার সময় অতিমাত্রায় স্থির থাকার প্রবণতা স্বাভাবিক আচরণের প্রকাশ নয়।একই শব্দ বা বাক্যাংশ বারবার বলা:
এটা হয় কারণ মিথ্যাবাদি আপনাকে বোঝানোর চেষ্ঠা করছেন। এর আরেকটি কারণ হলো, সন্তোষজনক জবাব খুঁজতে তারা শব্দ বা বাক্য খুঁজে পায় না। এ কারণে একই শব্দ বা বাক্য বারবার বলতে থাকে।অতিরিক্ত তথ্য প্রদান করা:
যখন কেউ আপনাকে অতিমাত্রায় অপ্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের চেষ্ঠা করে, তবে তার মিথ্যা বলার বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তারা খুব দ্রুত আপনাকে বোঝানোর চেষ্ঠা করবে যে, সে যা বলছে তা সব সত্যি। আর এ কারণেই অতিরিক্ত তথ্য দেয়ার চেষ্ঠা করেন।মুখ বা ঠোঁটে হাত দেয়া:
মিথ্যা কথা বলার সময় কেউ তার হাত মুখে রেখে কথা বলার চেষ্ঠা করেন। এর অর্থ কিছু কথা তিনি বলতে চাচ্ছেন না, বা লুকাতে চাচ্ছেন। ঠোঁটে হাত রাখার অর্থ তিনি কথাবার্তা বন্ধ করতে চান।
অবচেতনভাবে দেহের অরক্ষিত অংশ ঢাকার চেষ্ঠা:
দেহের যে অংশটা ঢাকার প্রয়োজন নেই, মিথ্যাবাদী অবচেতনভাবে সে সব অংশ ঢাকার চেষ্ঠা করেন। যেমন- গলা, মাথা ইত্যাদি। ঐ সকল স্থানে অকারণে হাত রাখা বা হাত নাড়াচাড়া করা ইত্যাদি আচরণ প্রকাশ পায়।
দেহের যে অংশটা ঢাকার প্রয়োজন নেই, মিথ্যাবাদী অবচেতনভাবে সে সব অংশ ঢাকার চেষ্ঠা করেন। যেমন- গলা, মাথা ইত্যাদি। ঐ সকল স্থানে অকারণে হাত রাখা বা হাত নাড়াচাড়া করা ইত্যাদি আচরণ প্রকাশ পায়।
পা নাড়ানো:
মিথ্যা বলার সময় মানুষ পা নাড়ায় অতিমাত্রায়। এতে তার অস্বস্তির প্রকাশ ঘটে। এর আরেকটি অর্থ মিথ্যাবাদী এখনই এই স্থান থেকে সরে পরতে চান।কথা বলা কঠিন হয়ে পড়ে:
যেকোন মিথ্যাবাদীর জন্য ক্রমাগত মিথ্যা কথা বলা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ ¯œায়বিক চাপে তার হরমোন প্রবাহের মাত্রা কমতে থাকে। মুখও শুকিয়ে যেতে থাকে। ফলে তার কথা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়। এর লক্ষণ প্রকাশ পায় বারবার ঠোঁটে কামড় বা ঠোঁট চাটা ইত্যাদি।
চোখের পাতা না ফেলে তাকিয়ে থাকা:
যখন মানুষ মিথ্যা কথা বলে তখন স্বাভাবিকভাবে তারা চেখে চোখ রাখতে চায় না। তবে চতুর মিথ্যাবাদী আপনার চোখে চোখ রাখার চেষ্ঠা করবে। এক্ষেত্রে চোখে চোখ রেখে মানুষ সাধারণত তা চোখের পাতা স্বাভাবিকমাত্রায় বন্ধ হবে, আবার খুলবে। কিন্তু মিথ্যাবাদী বেশী সময় ধরে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকার চেষ্ঠা করবে। এ সময় তাদের চোখে পলক পড়বে না। অতি সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে মিথ্যাবাদী একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আপনাকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্ঠা করবে।
যখন মানুষ মিথ্যা কথা বলে তখন স্বাভাবিকভাবে তারা চেখে চোখ রাখতে চায় না। তবে চতুর মিথ্যাবাদী আপনার চোখে চোখ রাখার চেষ্ঠা করবে। এক্ষেত্রে চোখে চোখ রেখে মানুষ সাধারণত তা চোখের পাতা স্বাভাবিকমাত্রায় বন্ধ হবে, আবার খুলবে। কিন্তু মিথ্যাবাদী বেশী সময় ধরে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকার চেষ্ঠা করবে। এ সময় তাদের চোখে পলক পড়বে না। অতি সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে মিথ্যাবাদী একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আপনাকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্ঠা করবে।
উত্তেজিত হয়ে অতিরিক্ত যুক্তি তুলে ধরা:
অনেক মিথ্যাবাদী ধরা খেয়ে গেলে তার স্বাভাবিক আচরণ ধরে রাখতে পারে না। ফলে উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং তার মিথ্যাকে সত্য করতে প্রচুর পরিমাণে যুক্তি তর্ক উপস্থাপনের চেষ্ঠা করে। তা করতে গিয়ে প্রায়ই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন, এমনকি অঘটনও ঘটাতে পারেন।মিথ্যা হাসি:
আবার হাসিও কিন্তু মিথ্যা আছে। এই মিথ্যা বা মেকি হাসি বুঝতে চোখে তাকান। আন্তরিক হাসিতে চোখের নিচে কুঞ্চিত হয়। আর লোক দেখানো মেকি হাসির সময় চোখের নিচে কোন ভাঁজ পড়ে না। কাজেই কেউ আপনাকে দেখে হাসলে চোখের ভাব দেখে বুঝবেন তিনি সত্যিই হাসছেন কিনা।মিথ্যাবাদী ধরার আরও সহজ ১০টি কৌশল
------------------------
এক. যারা মিথ্যা কথা বলে তারা আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে না। অথবা অতিমাত্রায় আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে। যখন কেউ মিথ্যা কথা বলে, তখন তিনি ভাবেন তাকে পরখ করছে। তাই নিজেকে বাঁচাতে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকেন কিংবা এদিক ওদিক চোখ ফেরান। আবার কোনো কোনো মিথ্যুক মিথ্যা বলার সময় অনবরত চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন। কারণ তারা মনে করেন চোখে চোখ রেখে কথা বললে আপনি তার কথা বিশ্বাস করবেন।
দুই. মিথ্যাবাদীরা খুব একটা সংকোচবোধ করেন না। যেমন- ‘কোনো নারীর সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক নেই।’ কোনো মিথ্যাবাদী এমন মন্তব্য করে নিজের কথা স্পষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ মন্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা এর ফলে অনেকাংশে কমে যায়। অনেকেই আবার প্রশ্ন করে বসেন ‘আপনি কোথা থেকে জানতে পারলেন।’ আপনি যতক্ষণে এ প্রশ্নের জবাব দেন ততক্ষণে মিথ্যবাদী নতুন গল্প সাজিয়ে নেন।
তিন. মিথ্যুকদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজও তাদের ধরিয়ে দিতে পারে। মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকে উসখুস করেন। যার সঙ্গে কথা বলছেন, তার দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার বারবার চোখের পাতা ফেলেন। গলার স্বরও ক্রমাগত পরিবর্তন হতে থাকে তার। অনেক সময় হাত মুড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এমন হলে বুঝবেন, ওই ব্যক্তি যে বিষয়ে বেশি কথা বলতে চাইছে না বা বেশি তথ্য জানাবেন না।বারবার মুখে হাত দেন বা হাতের কাছে যা আছে তা নিয়েই নাড়াচড়া শুরু করেন।
চার. কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করা না হলেও মিথ্যাবাদীরা অনেক সময় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি তথ্য দিয়ে ফেলেন। কারণ তারা মনে করেন, বেশি তথ্য তাদের দাবিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। কার্যত এর ফলে তাদের গল্প বেশি জটিল ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। গল্প যত বড় হয় বিশ্বাসযোগ্যতাও তত দূরে সরে যায়।
পাঁচ. যে মিথ্যা কথা বলছে, সে আত্মপক্ষ সমর্থনে বেশি জোর দিয়ে থাকে। নিজের উপর থেকে মনোযোগ সরাতে সমস্ত পন্থা অবলম্বন করবে। আপনি তার ইমোশনে আঙ্গুল তুলেছেন বলে, খুব শিগগিরি রেগে যাবে। যে ব্যক্তি সত্য কথা বলে সে অফেন্সিভ হয়ে পড়ে।
ছয়. যারা মিথ্যা বলেন তারা তুচ্ছ বিষয়কেও সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেন, কিন্তু বহু গুরুত্বপূণ তথ্য লুকিয়ে ফেলেন। তথ্য অতিরঞ্জিত করাকে মিথ্যাবাদীরা নিরাপদ মনে করেন। কিন্তু শ্রোতা বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শ্রোতা সমস্ত তথ্য মনে রাখেন এবং পরে প্রশ্ন করেন। সত্য হলে আগের ও পরের মন্তব্যে কোনো তফাত থাকে না।
সাত. চোখের মুভমেন্ট ডিরেকশন লক্ষ্য রাখুন। ডান হাতি কোনো ব্যক্তি কোনো কিছু মনে করার চেষ্টা করলে তিনিও চোখ বাম দিকে ঘুরিয়ে রাখবেন। বাঁহাতি লোকেরা এর বিপরীত দিকে করেন। মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকেই বার বার চোখের পাতা ফেলেন বা চোখ কচলান। বার বার চোখে হাত দিলেও আঁচ করা যায় ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলছেন।
আট. মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকেই অতিরিক্ত ঘামেন। আবার অনেক ব্যক্তিই আছে যারা নার্ভাস বা লজ্জাবোধ করলে ঘামতে শুরু করেন। এ ধরণের ব্যক্তিকে আবার মিথ্যাবাদী বলবেন না। কিন্তু কেউ যদি কথা বলার সময় ঘামতে থাকেন এবং সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে উঠেন ও কষ্ট করে ঢোক গিলতে থাকেন তাহলে বুঝবেন অবশ্যই তিনি মিথ্যা বলছেন।
নয়. মিথ্যাবাদীর মাইক্রো এক্সপ্রেশন লক্ষ্য রাখুন। কথার শুরুতে হাসি মুখ থাকলেও সে হাসি বেশিক্ষণ স্হায়ী হবে না। অবচেতন মনে অনেকেই এই মাইক্রো এক্সপ্রেশন লক্ষ্য করে থাকেন। তারা বুঝতে পারে মিথ্যা বলছে। কারণ যারা মিথ্যে বলছে তাদের মাইক্রো এক্সপ্রেশন মন দিয়ে লক্ষ্য করেছেন তারা।
দশ. মিথ্যাবাদীকে একই গল্প দ্বিতীয়বার বলতে বলুন। দেখবেন ওই ব্যক্তি যদি মিথ্যা বলার জন্য গল্প বানিয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমবার যা বলেছেন তার সঙ্গে পরের বারের গল্পের কোনো মিল থাকবে না।
Ref: [https://goo.gl/EN6XM5]
Awewsome....!!!
ReplyDelete